আবার অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল নন্দীগ্রাম।
আগে যা ঘটেছে - সেজ এর জন্য জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে, এই ভয়ে ভীত গ্রামবাসী প্রতিরোধ গড়ে তোলে ও যাতে প্রশাসন বা পুলিশ গ্রামে না ঢুকতে পারে তার জন্য রাস্তা কেটে দেয়। এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব বাবু অভয় দেন যে জোড় খাটিয়ে জমি নেওয়া হবে না। কিন্তু তাতে ভয় ভাঙ্গে নি কারোই।
গত আড়াই মাস এইভাবে কেটে যাবার পর আজ পুলিশের বড় বাহিনী দুটি বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে নন্দীগ্রাম প্রবেশ করার চেষ্টা করে, এবং প্রচন্ড প্রতিরোধের মুখে পরে। এর পরেই পাওয়া যায় প্রায় ১৪জন মৃত ও বেশ কিছু আহতদের তালিকা।
আগে যা ঘটেছে - সেজ এর জন্য জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে, এই ভয়ে ভীত গ্রামবাসী প্রতিরোধ গড়ে তোলে ও যাতে প্রশাসন বা পুলিশ গ্রামে না ঢুকতে পারে তার জন্য রাস্তা কেটে দেয়। এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব বাবু অভয় দেন যে জোড় খাটিয়ে জমি নেওয়া হবে না। কিন্তু তাতে ভয় ভাঙ্গে নি কারোই।
গত আড়াই মাস এইভাবে কেটে যাবার পর আজ পুলিশের বড় বাহিনী দুটি বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে নন্দীগ্রাম প্রবেশ করার চেষ্টা করে, এবং প্রচন্ড প্রতিরোধের মুখে পরে। এর পরেই পাওয়া যায় প্রায় ১৪জন মৃত ও বেশ কিছু আহতদের তালিকা।
ঠিক কি ঘটনা ঘটল নন্দীগ্রামে? বিভিন্ন টিভি চ্যানেল বিভিন্ন কথা শোনাচ্ছে। বিভিন্ন পার্টি বিভিন্ন বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছে। ইন্টারনেটে বিবিসি, এনডিটিভি, এমএসএন, টাইমস অফ ইন্ডিয়া ইত্যাদি সাইটগুলিতে খবরটা এসে গেলেও, বাংলা কোনো সাইট এখনো খবরটি আপলোড করেনি। রিয়েল টাইম রিপোর্টিং এর কনসেপ্ট এদের কাছে এখনো দূর অস্ত বলে মনে হয়।
সরকার ও পুলিশের তরফ থেকে বলা হচ্ছে যে পুলিশের উদ্দেশ্য ছিল শান্তিপূর্ণ ভাবে গ্রামে ঢুকে, কেটে দেওয়া রাস্তাগুলি মেরামত করা। এই বার্তা তারা লাউডস্পিকার দিয়ে প্রচারও করছিলেন বলে জানিয়েছেন তাদের কর্মকর্তারা। কিন্তু মানুষ তাদের কথা বিশ্বাস করে নি ও পুলিশকে প্রবল জনরোষের মুখে পরতে হয়। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে প্রায় ৫০০০ ক্ষিপ্ত মানুষ তাদের ইট, লাঠি, পাথর, এবং পরে বোমা ও পাইপগান নিয়ে আক্রমন করে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে পুলিশ সতর্কবাণী, তারপর কাঁদানে গ্যাস, রাবার পেলেট ও সর্বশেষে আত্মরক্ষার্তে গুলি চালাতে বাধ্য হয়, এবং তাতে নিহত ও আহত হন কিছু আক্রমণকারিরা। পুলিশের মতে এক ভায়োলেন্ট মবকে কন্ট্রোলে আনতে ও নিজেদের বাঁচাতেই পুলিশের আজকের গুলিচালনা। এও শোনা যাচ্ছ যে আজকের ঘটনায় আর্মড নকশালরাও ছিল যারা পুলিশের ওপর গুলি চালায়।
অন্যদিকের খবর এই যে আনআর্মড মানুষের উপর পুলিশ গুলি চালিয়েছে। টিভিতে যে ছবি দেখানো হচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে গ্রামবাসীরা ছুড়ছে ইটপাটকেল। পুলিশকে গুলি বা বোমা মারার কোনো চিত্র আমরা দেখতে পাই নি এখনো।
মারা গেছেন কারা, বেশ কিছু মহিলা ও যুবক। মৃতের মধ্যে কিছু বাচ্চাও নাকি আছে। কি ভাবে এটা ঘটল? শোনা যাচ্ছে যে পুলিশ আটকাতে জমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ দল তাদের প্রতিরোধের অগ্রভাগে দাড় করিয়েছিল মহিলা ও কিছু বাচচাদেরও। ওতএব পুলিশের গুলির শিকার হন তারাই প্রথম।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এবারো নন্দীগ্রাম যেতে দেওয়া হয়নি। একটি বাংলা চ্যানেলের মতে, তাঁর কনভয় আটকে দেয় সিপিএম এর ক্যাডাররা। সিপিএম এর এক নেতা অবশ্য এই চ্যানেলে দেখানো ক্যাডারদের ছবিকে 'পুরানো ছবি দেখানো হচ্ছে' বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তৃণ্মূল নেত্রী দাবি করেছেন যে মারা গেছে ১০০জনের ওপর, এবং ক্যাডারদের হাতে ধর্ষিত ও নিহত হয়েছেন বহু মহিলা। তাঁর মতে বহু মানুষের দেহ গ্রাম লাগোয়া নদিতে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং হবে।
দুপুরের মধ্যে এই ঘটনার প্রতিবাদের জের ছড়িয়ে পরে রাজ্যে। রাস্তা, ট্রেন অবরোধ, বাস ভাংচুর, ইত্যাদির পাশে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানান রাজ্যের আইনজীবিরা। সরকার পরিচালিত নাট্য একাডেমী থেকে পদত্যাগ করেন কিছু বিশীষ্ট নাট্যশিল্পী। এরই মধ্যে তৃণমূল, কংগ্রেস ও এস ইউ সি আই পরশু অর্থাৎশুক্রবার ১২ ঘন্টার বাংলা বন্ধ ঘোষনা করে। জামাত-এ-উলেমার কথা এখনো জানা যায়নি। বিজেপি ওই একই দিন ২৪ ঘন্টার বন্ধ ঘোষনা করেছে। বন্ধের দরুণ পিছিয়ে দেওয়া হল সেদিনের উচচমাধ্যমিক ও অন্যান্য বোর্ড পরীক্ষা। সিপিএমএর মুখপাত্র বিমান বসু বিরোধিরা আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বন্ধ না ডেকে শুক্রবার অর্থাৎ উইকএন্ডের লাগোয়া ও বোর্ড পরীক্ষার দিনে বন্ধ ডাকায় তার তীব্র সমালোচনা করেন।
ঘটনার রেশ ছোয় বিধানসভা ও লোকসভাকেও। তৃণমূল চাইছেন বুদ্ধবাবুর পদত্যাগ বা ছাটাই। তারা রাস্ট্রপতি শাসনও চাইছেন। গোলমালের দরুণ বিধানসভা মুলতুবি করতে বাধ্য হন স্পিকার। সেটা বোধহয় জানানো হয় না বুদ্ধবাবুকে। ফলে বিকেল চারটে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী তার বিবৃতি দিতে এসে দেখেন হল ফাঁকা। তারপর তিনি কিছুক্ষণ স্পিকারের ঘরে কাটিয়ে ফিরে যান। এখন তাঁর বিবৃতির জন্য আমাদের অপেক্ষা করা ছাড়া গতি নেই। অন্যদিকে রাজ্যপাল পর্যন্ত নন্দীগ্রাম নিয়ে তার উদ্বেগ ও শোক প্রকাশ করেছেন।
উদ্বিগ্ন বাম সরকার অন্তর্ভুক্ত শরিক দলগুলিও, যেমন সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক ও আর এস পি। তারা জানিয়েছেন যে এই পদক্ষেপের কথা নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করা হয় নি। এই ঘটনা আরো একবার বামফ্রন্টের অভ্যন্তরীন দ্বন্দকে প্রকাশ্যে এনে দিল। এবার দেখার বিষয় এই যে ব্র্যান্ড বুদ্ধের ওপর এই ঘটনা কি রকম প্রভাব ফেলে।
অন্যদিকে এদিন জিন্দাল গোষ্ঠিও মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করে তাদের নতুন ইস্পাত কারখানার জন্য জমি নিয়ে আলোচনা করার জন্য।
কাল রাজ্যের নানান জায়গায় গন্ডগোলের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
3 comments:
নন্দীগ্রামে মৃতের সংখ্যা সরকার যা বলছে তার চেয়ে অনেক বেশি তা যে কোনো লোকই বুঝতে পারছে,কারণ আমরা জানি যে কোনো ঘটনার দায় কমাতে/এড়াতে সরকার ক্ষতিগুলোকে কম করেই দেখায়|
১.যদি মেনে নিই যে বাধ্য হয়ে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল,তাহলে একজন পুলিশকেও এমনকি আহত হতে দেখা গেল না কেন?
২.মাওবাদী থাকার ঘটনা সত্যি হলে,"বহিরাগত"দের েগ্রপ্তার করা হল না কেন? মাওবাদীরা তাদের প্রিয় অস্ত্র মাইন ছেড়ে ঢিল ছুঁড়বে কেন?
৩.পুলিশ আক্রান্ত হলে মহিলাদের পিঠে গুলি লাগবে কেন? লাগার কথা সামনের দিকে|
৪.যে জায়গার প্রায় সব লোকই পুরোনো বামপন্হী,তারা শুধু "গুজব" শুনে সরকারের বিরোধিতা করছেন,কীভাবে বিশ্বাস করব?
৫.যে সি.পি.এম সমর্থকরা ঘরছাড়া,তারা/তাদের পরিবারের পুরুষরা ধোওয়া তুলসি পাতা এবং নির্যাতিত, তা তো দুবেলা বাম নেতাদের মুখে শুনছি|তা মেনে নিলে, যারা সি.পি.এম সমর্থক নন এবং ঘরছাড়া, তাদের জন্য প্রশাসনের মাথাব্যথা নেই কেন? তাদের বাঁচার অধিকার নেই?
৬. সরকারের দায়িত্ব নেই আহতদের দেখতে গিয়ে অন্তত দুটো আশ্বাসবাণী শোনানোর?
৭. কংগ্রেস, তৃণমূল ও বি.জে.পি.র মুখে বড়ো বড়ো কথা মানায়না, বরানগর কারা করেছিল? আর গুজরাট?
পাবলিককে গরু ভাবাটা নেতারা কবে বন্ধ করবেন?
আপনার লেখা ভাল লাগল ইন্দ্রানি। ঠিক বলেছেন, এ হোলো ঠগ বাঁছতে গাঁ উজার!
আমাদের বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের ভূমিকা অনেক। আমরা অনেকেই নানা রকম খাবার ভালোবাসি। আমরা সবাই কম বেশি মাছ ভালোবাসি। কিন্তু বর্তমানে তাজা বা টাটকা মাছ খোঁজে পাওয়া যাই না। আপনি কি সামুদ্রিক মাছ, গলদা চিংড়ি, চিংড়ি, তাজা জল-মাছ, কাঁকড়া, ইত্যাদি দরণের মাছ খোঁজ করছে? তাহলে ভিজিট করুন freshfishbd.
Post a Comment